Translate

Thursday, September 8, 2016

জার্মানির ভি-২ রকেট ( আধুনিক মিসাইলের পূর্ব পুরুষ )


ভি-২ হচ্ছে জার্মানির তৈরি ২য় বিশ্বযুদ্ধের সময়কার একটি ক্ষেপণাস্ত্র এবং এটি পৃথিবীর প্রথম ব্যবহৃত ক্ষেপণাস্ত্র যা জার্মান বাহিনী ব্রিটেন এবং ফ্রান্সের বিরুদ্ধে ব্যবহার করে । যদিও যুদ্ধের শেষ দিকে এটি ব্যবহার শুরু হয় । তবে সামরিক বিশারদগণ এর মাধ্যমে প্রথম জানতে শুরু করেন ক্ষেপণাস্ত্রের ধ্বংসলীলা এবং ভাবতে শুরু করেন ভবিষ্যৎ যুদ্ধের এই গেমচেঞ্জার অস্ত্রটি সম্পর্কে । যাই হোক, ১৯৪৪ সালের ৮ সেপ্টেম্বর প্রথম জার্মান বাহিনী প্যারিস এবং লন্ডনে এই ভি-২ ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে যার ফলাফল ছিল অবিশাস্য । প্রায় ২৫০০ সেনাসহ বেসামরিক নাগরিক মারা গিয়েছিল এবং ৬০০০ এর মত হয়েছিল আহত । এরপর থেকে সর্বমোট ৩১৭২ বার ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় বহু মানুষ হতাহত হয় । এই রকেট নিক্ষেপের জন্যে প্রস্তুত করতে ৯০ মিনিট সময় লাগত এবং নিক্ষেপের মাত্র ৩০ মিনিটের মধ্যে এটি ব্রিটেন এবং ফ্রান্সে আঘাত হানতে সক্ষম ছিল । ভয়াবহ ক্ষিপ্র এই রকেটকে রোখার মত কোনও প্রযুক্তি তখন ব্রিটেন, ফ্রান্স বা আমেরিকার হাতে ছিল না । আমেরিকা এবং সোভিয়েতরা এই ক্ষেপণাস্ত্রের প্রযুক্তি সম্পর্কে জানতে ব্যাকুল ছিল । যুদ্ধে জার্মানি পরাজয়ের পর ব্রিটেন , আমেরিকা এবং সোভিয়েত ইউনিয়ন এই ক্ষেপণাস্ত্র হস্তগত করে এবং তাদের নিজস্ব ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তির উন্নয়ন ঘটায় ।

তথ্যসূত্র ঃ militaryhistory.about.com



Tuesday, June 14, 2016

বিশ্বের সেরা আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গুলো

আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা বা এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম বর্তমান যুগে সশস্ত্র বাহিনীর একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ । শত্রুদেশের ঝটিকা বিমান আক্রমন বা মিসাইল হামলার মুখে তাৎক্ষনিক ব্যবস্থা নিয়ে ক্ষয়ক্ষতি কমানো এবং দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাসমূহের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার কোনও বিকল্প নেই । এটি বিমান বাহিনীর একটি পরিপূরক ব্যবস্থা হিসেবে দায়িত্ব পালন করে । আসুন এবার জেনে নেই বর্তমান সময়ে সার্ভিসে থাকা কিছু শক্তিশালি আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সম্পর্কে ।




S-300 


এস-৩০০ সোভিয়েত রাশিয়া নির্মিত বর্তমান সময়ের শক্তিশালি একটি এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম । এটি Almaz-Antey কোম্পানি নির্মাণ করেছে এবং ১৯৭৮ সাল থেকে বর্তমান সময় অবধি ব্যবহৃত হচ্ছে । এটি একটি দীর্ঘ পাল্লার  এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম যার নেভাল স্পেশালাইজড ভার্সন সহ অনেকগুলো ভার্সন রয়েছে । শত্রু বিমান ও মিসাইল সহ সব ধরনের হুমকি মোকাবেলায় এর আছে শক্তিশালি PESA রাডার যা ৩০০ কিলোমিটার ব্যাসের মধ্যে যেকোনো হুমকিকে সনাক্ত করতে পারে  এবং ৩০ কিলোমিটার উচ্চতা অবধি থাকা লক্ষ্যবস্তুকে নিমেষে ধ্বংস করে দেয়ার জন্য মিসাইল ছোড়ার নির্দেশ দিতে পারে । এর মিসাইলগুলো বিভিন্নভাবে বিভিন্ন ভার্সনে ব্যবহার হয় এবং এদের সর্বোচ্চ রেঞ্জ ৩০০ কিমি । এটি রাডারের সহায়তায় একই সাথে ১২ টি টার্গেট সনাক্ত করতে পারে এবং তাৎক্ষনিক ভাবে ৪ টি টার্গেটকে ধ্বংস করার জন্য মিসাইল ছুড়ে দিতে পারে । এস-৩০০ এর মিসাইলের লক্ষ্যবস্তুকে এর মিসাইল ততক্ষণ পর্যন্ত তাড়িয়ে বেড়ায় যতক্ষণ না পর্যন্ত একে ধ্বংস না করে ছাড়ে ।  এটি বিশেষ করে ন্যাটোভুক্ত আমেরিকা এবং দেশগুলোর বিমান ও মিসাইলকে প্রতিহত করার জন্য বিশেষ ভাবে তৈরি একটি কার্যকর আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা যা বিভিন্ন দেশের সশস্ত্র বাহিনীর প্রথম পছন্দ হিসেবে স্থান দখল করে আছে । বর্তমানে রাশিয়া, ভারত, ইরান, আলজেরিয়া, বেলারুশ, বুলগেরিয়া, ইউক্রেন, ভেনেজুয়েলা , সিরিয়া, স্লোভাকিয়া, আরমেনিয়াসহ বিশ্বের বহু দেশ এই এয়ার ডিফেন্স সিস্টেমটি ব্যবহার করে । 

Friday, March 22, 2013

আধুনিক সমরপ্রযুক্তির বিস্ময়কর আবিষ্কারঃ পাইলটবিহীন ড্রোন বিমান

পাইলটবিহীন বিমান (UAV) বা ড্রোন বিমান আধুনিক সমরপ্রযুক্তির এক অনন্য সংযোজন। দিবা-রাত্রি শত্রু দেশের আকাশসীমায় গুপ্তচরবৃত্তি চালানো, নিজ দেশের আকাশসীমা পাহারা দেয়া, আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ, শত্রুদের বেতার ও রাডার সিস্টেমে ব্যাঘাত ঘটানো, আড়ি পেতে তথ্য যোগার করা থেকে শুরু করে প্রয়োজনে ছোটখাটো একটি যুদ্ধবিমানের ভুমিকাও পালন করতে পারে এই বিমান। এসব বিমান পাইলট বিহীন হওয়ায় যুদ্ধে পাইলটের মৃত্যুঝুকি থাকেনা তাই যেকোনো পরিস্থিতিতে এই ধরনের বিমান ব্যবহার করা যায়। বর্তমানকালের অনেক ড্রোন বিমান স্টিলথ প্রযুক্তির হওয়ায় খুব সহজেই এটি শত্রু দেশের রাডার সিস্টেম ফাঁকি দিয়ে তৎপরতা চালাতে পারে। তাই বর্তমান যুগে কার্যকর ও শক্তশালি বিমানবাহিনী এবং আকাশপ্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তুলতে ড্রোন বিমানের কোনও বিকল্প নেই। আসুন এবার জেনে নেয়া যাক বিশ্বের আলোচিত কয়েকটি ড্রোন বিমান সম্পর্কে।


RQ-170 Sentinel


আরকিউ-১৭০ সেন্সিয়াল মার্কিন বিমান নির্মাতা প্রতিষ্ঠান লকহিড মারটিন নির্মিত বর্তমান বিশ্বের সেরা ড্রোন বিমানগুলোর একটি। অত্যাধুনিক স্টিলথ ক্ষমতাসম্পন্ন এই বিমানটি মূলত রিকন অর্থাৎ শত্রু দেশের আকাশসীমায় নজরদারি করার জন্য তৈরি করা হয়েছে। রাডার ফাঁকি দিতে সক্ষম এই বিমানটির আকৃতি অনেকটা মার্কিন স্টিলথ বোম্বার বি-২ এর মত। এটি প্রায় ৫০,০০০ ফুট উপর দিয়ে উড়ে জেতে পারে। মার্কিন বিমানবাহিনীর সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স এজেন্সি এই বিমানটি অপারেট করে থাকে। এটি ২০০৭ সালে মার্কিন বিমান বাহিনীতে নিয়োজিত হয়।একটি Garrett TFE731  অথবা  General Electric TF34 টার্বোফ্যান ইঞ্জিনে পরিচালিত এই বিমানটি আফগানিস্তান, পাকিস্তান ও ইরানে পর্যবেক্ষণ ড্রোন হিসেবে অভিযান পরিচালনা করে আসছে। পাকিস্তানে ওসামা বিন লাদেন হত্যা মিশনেও এই বিমানটি অত্যন্ত সফলতার পরিচয় দিয়েছে। তবে ২০১১ সালের ডিসেম্বর মাসে ইরান আর্মির ইনটেলিজেন্ট ইউনিট একটি আরকিউ-১৭০ ড্রোন ভূপাতিত করার দাবি করে এবং তাদের ধৃত বিমানটির ভিডিও ফুটেজ প্রকাশ করে।মার্কিন পক্ষ থেকে পরে তাদের এই ধরনের একটি বিমান হারানোর কথা স্বীকার করেছে।



MQ-1 Predator


এমকিউ-১ প্রিডেটর মার্কিন প্রতিষ্ঠান জেনারেল এটোমিক্স এরোনটিক্যালস নির্মিত একটি কমব্যাট  ড্রোন।মার্কিন বিমানবাহিনী এবং সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স এজেন্সি এই ড্রোনটি ব্যবহার করে। এটি একি সাথে আকাশে গোয়েন্দাগিরি এবং কমব্যাট মিশনে সমান পারদর্শী। অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ক্যামেরা ও সেন্সর সংবলিত এই ড্রোনটি ১০০০০ ফুট দূর থেকেই মানবদেহের হিট সিগনেচার শনাক্ত করতে পারে। এটি কন্ট্রোল ইউনিটের নির্দেশনা ও স্যাটেলাইটের সাহায্যে নির্ভুলভাবে লক্ষ্যস্থির করে মিসাইল হামলা চালায়।আফগানিস্থান, পাকিস্তান, ইরাক, ইরান, লিবিয়া ও সোমালিয়াসহ বিশ্বের অনেক স্থানে মার্কিন বাহিনী এটি ব্যবহার করে আশাতীত ফল লাভ করে। একটি  Rotax 914F  প্রপেলার ইঞ্জিনে চালিত এই  ড্রোনটি  ২৫০০০ ফুট উচ্চতায় উঠতে পারে এবং এর সর্বোচ্চ ঘণ্টায় গতি ২১৭ কিঃ মিঃ। দীর্ঘক্ষণ আকাশে ভেসে থাকার ক্ষমতা সম্পন্ন এই বিমানটি বিভিন্ন ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র বহন করে। সাম্প্রতিক সময়ে আফগানিস্তান ও পাকিস্তানে এই ধরনের ড্রোন ব্যবহার করে বেসামরিক মানুষ হত্যার অভিযোগ উঠেছে। ২০১২ সালের নভেম্বর মাসে ইরানি বিমানবাহিনী তাদের আকাশসীমা থেকে একটি প্রিডেটর ড্রোনকে গোলাবর্ষণ করে  তাড়িয়ে দেয়। বর্তমানে ইউএস বিমানবাহিনীসহ ইতালি, মরক্কো, তুরস্ক ও আরব আমিরাত এই ড্রোনটি ব্যবহার করছে।



ScanEagle
                                                                        
স্ক্যানঈগল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বোয়িং ইনশিটু ডিফেন্স ইন্ডাস্ট্রির তৈরি একটি গোয়েন্দা ড্রোন। এর পরিচালন খরচ অনেক কম এবং দীর্ঘসময় ধরে ব্যবহার উপযোগী। মূলত মৎস্য শিকারিদের কাজে সাহায্য করার জন্য এটি তৈরি করা হলেও বর্তমানে মার্কিন আর্মি, নেভি ও বিমানবাহিনী বিভিন্ন গোয়েন্দা অভিযানে এটি ব্যবহার করে আসছে। নিয়মিতভাবে আপগ্রেড করে এটিকে বহুমুখী ব্যবহার উপযোগী করে তৈরি করা হয়েছে। এটি ২০০৫ সালে সর্বপ্রথম ইউএস নেভিতে অন্তর্ভুক্ত হয়।শক্তিশালী ইনফ্রারেড ক্যামেরা এবং NanoSAR A রাডার সংবলিত এই ড্রোনটি আকাশে গোয়েন্দা অভিযানে এর কার্যকারিতা প্রমান করেছে।একটি ২ স্ট্রোক পিস্টন ইঞ্জিন সংবলিত এই ড্রোনটি  ১৬০০০ ফুট উচ্চতায় উঠতে পারে এবং গতি ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১২৮ কিঃমিঃ । মার্কিন বাহিনী আফগানিস্তান ও ইরাক অভিযানে এই ড্রোন ব্যবহার করে।২০১২ সালের ৪ ডিসেম্বর ইরান তাদের আকাশসীমা থেকে এই ধরনের একটি ড্রোন আটক করার দাবি করেছে। যদিও মার্কিন বাহিনী তাদের এরকম কোন ড্রোন হারানোর কথা স্বীকার করেনি। যুক্তরাষ্ট্র ছাড়াও বর্তমানে অস্ট্রেলিয়া, পোল্যান্ড, নেদারল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, কানাডা, কলাম্বিয়া ইত্যাদি দেশ এই ড্রোনটি ব্যবহার করছে। ইরান সম্প্রতি স্ক্যানঈগল ড্রোনের অনুকরণে তাদের নিজস্ব ড্রোন তৈরির ঘোষণা দিয়েছে।


IAI Eitan


এইটান ইসরায়েলি এরোস্পেস ইন্ডাস্ট্রি নির্মিত একটি অত্যাধুনিক গোয়েন্দা ড্রোন বিমান। এটি মূলত ইসরায়েল নির্মিত হেরন (Heron) ড্রোনের একটি উন্নত সংস্করন। দীর্ঘ সময় আকাশে ভেসে থাকার ক্ষমতাসম্পন্ন এই ড্রোনটি কমব্যাট মিশনেও ব্যবহার উপযোগী। অটোম্যাটিক টেকঅফ-ল্যান্ডিং, উন্নত এভিয়নিক এবং মাল্টিপল টার্গেট আইডেন্টিফাইং ক্ষমতাসম্পন্ন এই ড্রোন বিমানটি বর্তমান বিশ্বের সেরা ড্রোন গুলোর মধ্যে অন্যতম। ২০০৭ সালে সার্ভিসে আসার পর থেকে ইসরায়েলি বিমান বাহিনীর ইন্টেলিজেন্স ইউনিট এটি ব্যবহার করে আসছে। এছাড়া জার্মানি, ফ্রান্স, স্পেন ও ব্রিটেনে ইসরায়েল এই বিমান রপ্তানি করেছে। একটি  Pratt & Whitney PT6A ইঞ্জিন সংবলিত এই বিমানের সর্বোচ্চ গতি ঘণ্টায় ২০৭ কিঃমিঃ এবং সার্ভিস সিলিং রেট ৪৫,০০০ ফুট। একটি রিপোর্ট থেকে জানা যায় ২০০৯ সালে সুদান থেকে গাজা অভিমুখি একটি ইরানি সামরিক কনভয়ের উপর এয়ার স্ট্রাইকে এই ড্রোন ব্যবহার করা হয়েছিল।




IAI Harpy



হারপি ইসরায়েল এরোস্পেস ইন্ডাস্ট্রি (IAI) নির্মিত একটি আনম্যানড কমব্যাট এরিয়াল ভিহিকল (UCAV) । এই ড্রোনটি একইসাথে কমব্যাট এবং রিকন দুই ধরনের মিশনেই অংশ নিতে পারদর্শী। মূলত শত্রু দেশের রাডার সিস্টেমে ঝটিকা আক্রমন করার জন্য এই ড্রোনটি তৈরি করা হলেও এটি গোয়েন্দাগিরিসহ বহুমুখী কাজে ব্যবহার উপযোগী। এটি অনেক উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন বিস্ফোরক বহন করতে পারে। ২০০৪ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গণচীনের কাছে এই ধরনের ড্রোন রপ্তানি করতে বাধা দিয়েছিল। কারন তাদের ধারনা, এই ড্রোনে মার্কিন অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে যা চীনের কাছে চলে যাওয়ার আশংকা থাকে। কিন্তু ইসরায়েল মার্কিন দাবি নাকচ করে দিয়ে জানায়, এটি সম্পূর্ণভাবে ইসরায়েলি প্রযুক্তিতে নির্মিত এবং ইসরায়েল তাদের এই বিমান রপ্তানি করার অধিকার রাখে। একটি  UEL AR731 Wankel rotary ইঞ্জিনে পরিচালিত এই ড্রোনটির সর্বোচ্চ গতি ঘণ্টায় ১৮৫ কিঃমিঃ । এটি প্রায় ৩২ কেজি উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন বিস্ফোরক বহন করতে পারে। বর্তমানে ইসরায়েল ছাড়াও চিলি, দক্ষিন কোরিয়া, গণচীন, ভারত, তুরস্ক ইত্যাদি দেশ এই ড্রোন ব্যবহার করে।



SELEX Galileo Falco 



ফ্যালকো ইটালির  SEGaliLEX leo Avionica নির্মিত একটি পর্যবেক্ষণ ইউএভি। এটি মূলত গোয়েন্দা নজরদারির জন্য বিশেষভাবে নির্মিত হয়েছে। অত্যাধুনিক ইনফ্রারেড ক্যামেরা এবং সেন্সর সংবলিত এই ড্রোনটি অপেক্ষাকৃত মাঝারি উচ্চতায় আকাশে ভেসে থাকতে সক্ষম । এটি সাধারনত কোনও অস্ত্র বা মিসাইল ব্যবহার করেনা তবে এর পরবর্তী আপগ্রেড ভার্সন গুলোতে কমব্যাট উইপন সংযোজন করা হবে। এটি ১৭ ফুট লম্বা এবং ২৪ ফুট চওড়া একটি বিমান যা অপেক্ষাকৃত মাঝারি উচ্চতায় আকাশ থেকে নজরদারি চালাতেপারে । সিঙ্গেল ইঞ্জিনে পরিচালিত ড্রোনটি ঘণ্টায় ২১৬ কীঃমিঃ বেগে চলতে পারে এবং এর সার্ভিস সিলিং রেট ২১,৩২৫ ফুট। এটি প্রায় ৭০ কেজি বোমা বহনে সক্ষম যদিও বর্তমান ভার্সন গুলোতে কোনও যুদ্ধাস্ত্র সংযোজন করা হয়নি। উন্নতমানের AESA synthetic aperture radar (SAR) রাডার সংবলিত এই ড্রোনটি ইটালি, পাকিস্তান, লিবিয়া, জর্ডান ও সৌদি আরবের সামরিক বাহিনী ব্যবহার করছে। 




TAI Anka


আনকা তুরস্কের এরোস্পেস ইন্ডাস্ট্রি নির্মিত একটি অত্যাধুনিক নজরদারি ড্রোন বিমান। মূলত একটি পৌরাণিক জীবের নামে এই ড্রোনটি নামকরণ করা হয়েছে। এটি মধ্যম উচ্চতায় দীর্ঘক্ষণ আকাশে টহল দিতে সক্ষম। আনকা ড্রোনের নির্মাণের মাধ্যমে তুরস্ক মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের পরে ৩য় দেশের মর্যাদা পেল যারা  MALE UAV  নির্মাণ করতে পারে। এই ধরনের ড্রোনের বৈশিষ্ট্য হল এরা দীর্ঘক্ষণ আকাশে ভেসে থাকতে সক্ষম। অত্যাধুনিক ইনফ্রারেড ইলেকট্রো অপটিক ক্যামেরা, সেন্সর, সিনথেটিক এপারেচার রাডার ও অন্যান্য বহুবিধ প্রযুক্তি সংবলিত এই  ড্রোনটি তুরস্কের সামরিক সক্ষমতাকে আরও বাড়িয়ে দেবে। একটি Thielert Centurion ইঞ্জিনে চালিত এই ড্রোন ৩০,০০০ ফুট অবধি উচ্চতায় উঠতে পারে এবং এর সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ২১৭ কিঃমিঃ । এটি শীঘ্রই তুরস্কের সামরিক বাহিনীতে যুক্ত হবে বলে জানা গেছে।  মিশর সম্প্রতি এরূপ কয়েকটি ড্রোন কেনার জন্য তুরস্কের সাথে চুক্তি করেছে। এছাড়াও সৌদি আরবও এই ড্রোন কেনার ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করেছে।





Shahed 129 


শাহেদ ১২৯ ইসলামিক রিপাবলিক ইরান নির্মিত অত্যাধুনিক কমব্যাট ড্রোন । এটি ইরানে নির্মিত প্রথম MALE ইউএভি বা ড্রোন  বিমান। এটি একাধারে আকাশে গোয়েন্দাগিরি এবং কমব্যাট উভয় ধরনের মিশনেই সমান পারদর্শী। ইরানের মালিক আসতার এভিয়েশন বিশ্ববিদ্যালয় এবং শাহেদ এভিয়েশন এন্ড রিসার্চ ইন্সটিটিউটের ডিজাইনকৃত এই ড্রোনটি নির্মাণ করেছে ইরানের সর্ববৃহৎ বিমান নির্মাতা প্রতিষ্ঠান HESA । গ্রেট প্রফেট সেভেন সামরিক মহড়ার সময় এই ড্রোনটি সর্বপ্রথম উন্মোচিত করা হয়। ২০১২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ইরান এই ড্রোন নির্মাণের কথা ঘোষণা দেয়।  এটি ২৪ ঘণ্টারও বেশি সময় আকাশে ভেসে থাকতে পারে এবং  সর্বোচ্চ ২০০০ কিলোমিটার ব্যাপী বিস্তৃত এলাকায় অপারেশন চালাতে পারে। ইরানের ঘোষণা অনুযায়ী এতে ইরান নির্মিত ব্রিটিশ ডিজাইনের Wankel ইঞ্জিন ব্যবহার করা হয়েছে। এই ড্রোনটি ইরানি  Sadid-1 মিসাইল বহন করে থাকে। শীঘ্রই এটি ইরানের সামরিক বাহিনীতে যুক্ত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। 




Karrar 



কারার ইসলামিক রিপাবলিক ইরান নির্মিত অত্যাধুনিক কমব্যাট ড্রোনপার্সিয়ান কারার(karrar) শব্দের অর্থ আক্রমণকারী। এটি ইরানে তৈরি প্রথম লং রেঞ্জ কমব্যাট ক্যাপাবল ড্রোন যা অত্যন্ত দ্রুতগতিতে লক্ষ্যবস্তুতে ঝটিকা হামলায় পারদর্শী। এটি প্রথম আকাশে ওড়ে ২০০৯ সালে এবং ২০১০ সালের ২৩ আগস্ট ইরানের প্রেসিডেন্ট ডঃ আহমাদিনেজাদ এই ড্রোন নির্মাণের ঘোষণা দেন । ইরানের স্টেট টেলিভিশনে দেয়া ঘোষণা অনুযায়ী, এর কমব্যাট রেঞ্জ ১০০০ কিলোমিটার । এর মাধ্যমে ১১৫ কেজি বোমা অথবা  ২২৭ কেজি  precision-guided munition বহন করা যায়। এটি ৪টি Kowsar এন্টি-শিপ মিসাইল ও বহন করতে পারে। এটি আকাশে ওড়ার জন্য রকেট অ্যাসিস্ট সিস্টেম ব্যবহার করে। এই ড্রোনটি ৪ মিটার লম্বা । একটি ইরানিয়ান Toloue-4 সিঙ্গেল এঞ্জিনে তৈরি এই ড্রোনের সর্বোচ্চ  গতি ঘণ্টায় ৯০০ কিঃমিঃ। সর্বাধুনিক প্রযুক্তির কারার ড্রোন ইরানের সামরিক বাহিনীর সক্ষমতা আরও সুদৃঢ় করবে বলে ইরানি সামরিক বিশেষজ্ঞরা আশা প্রকাশ করেন।




SAGEM SPERWER-B



সাজেম স্পারওয়ার ফ্রান্সভিত্তিক ইলেক্ট্রোনিক ফার্ম সাজেম নির্মিত একটি রিকন ও কমব্যাট ইউএভি। এটি আকাশে একইসাথে গোয়েন্দাগিরি এবং কমব্যাট উভয় মিশনেই সমান পারদর্শী। প্রায় ১২ ঘণ্টাব্যাপী একনাগাড়ে আকাশে ভেসে থাকাতে পারে এই ড্রোনটি। প্রায় ১০০ কেজি বিস্ফোরক বহন ক্ষমতাসম্পন্ন এই ড্রোনে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ইলেক্ট্রো-অপটিক ইফ্রারেড সেন্সর, কমুনিকেশন ইন্টেলিজেন্স টেকনোলজি, এসএআর রাডার সংযোজিত হয়েছে। এটি Rafale Spike-LR ধরনের এন্টি-ট্যাংক মিসাইল বহন করে থাকে। একটি SNECMA  ইঞ্জিনে চালিত এই  ড্রোন ক্রুজ স্পীডে প্রায় ১৬০০০ ফুট উপর দিয়ে উড়ে যেতে সক্ষম । বর্তমানে ফ্রান্স, নেদারল্যান্ড, সুইডেন, গ্রীস, ও কানাডার সামরিক বাহিনী এই বিমানটি ব্যবহার করে ।


তথ্যসূত্রঃ  ১. উইকিপিডিয়া
                ২. প্রেসটিভি


(এই পোস্টটি 18 May, 2013 on 1:11 am তারিখে www.techtunes.com.bd  
ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হয়েছে )




Sunday, February 3, 2013

কাহের এফ-৩১৩ যুদ্ধবিমান এবং ইরানের সামরিক অগ্রযাত্রা


Qaher F-313


Qaher F-313 ইসলামিক রিপাবলিক ইরান নির্মিত একটি অত্যাধুনিক স্টিলথ যুদ্ধবিমান।রাডারের চোখকে ফাকি দিয়ে অত্যন্ত নিচু দিয়ে উড়ে যেতে সক্ষম  এই বিমানটিতে সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে।

ইরানের প্রেসিডেন্ট ডঃ মাহমুদ আহমাদিনেজাদ Qaher F-313 বিমান নির্মাণ সম্পর্কে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বলেছেন "এই বিমানের নির্মাণ ইরানের  বৈজ্ঞানিক অগ্রযাত্রাকে শীর্ষচূড়ায় নিয়ে গেছে।" এফ-৩১৩ বিমানটি ২০০৭ সালে ডিজাইন করা অনেকগুলো অত্যাধুনিক ডিজাইনের একটি যা সর্বাধুনিক প্রযুক্তি সংবলিত।

ইরানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী আহমেদ ভাহিদি বলেছেন " কাহের এফ-৩১৩ সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তিতে নির্মিত বিমান যা ইরানের শ্রেষ্ঠ বিমান প্রযুক্তিবিদদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টা এবং নিরলস পরিশ্রমের ফল। রাডারকে ফাকি দিতে সক্ষম এই বিমানটি অত্যন্ত নিচু দিয়ে উড়ে যেতে সক্ষম। এটি বিভিন্ন ধরনের যুদ্ধাস্ত্র ও বোমা বহন এবং শত্রু বিমানের সাথে আকাশ যুদ্ধে সমান পারদর্শী। অত্যন্ত সংক্ষিপ্ত রানওয়ে থেকে এটি উড়তে পারে।

ইরানের ইংরেজি ভাষার চ্যানেল প্রেস টিভির বরাত দিয়ে জানা যায় এটি যুক্তরাষ্ট্র নির্মিত এফ-১৮ হরনেট বিমানের সমকক্ষ যা আকাশযুদ্ধে শত্রু বিমানকে পরাজিত করা এবং শত্রু দেশের আকাশ প্রতিরক্ষা ধ্বংসে  অত্যন্ত কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে।

আশির দশকের পর থেকে ইরানের উপর পশ্চিমা বিশ্বের চাপিয়ে দেয়া অর্থনৈতিক এবং সামরিক নিষেধাজ্ঞার কারনে ইরান সামরিক প্রযুক্তি আমদানি করতে পারত না। এরপর ইরান নিজস্ব সামরিক শিল্প গড়ে তোলে। সাম্প্রতিক সময়ে ইরান নিজস্ব প্রযুক্তির যুদ্ধবিমান, ট্যাঙ্ক, যুদ্ধজাহাজ, সাবমেরিন, ক্ষেপণাস্ত্র, টর্পেডো, রাইফেল, পাইলট বিহীন বিমান এবং অন্যান্য যুদ্ধ সরঞ্জাম নির্মাণ করছে। এর ফলে দেশটি সামরিক ক্ষেত্রে প্রায় সয়ংসম্পূর্ণ হয়ে উঠেছে।

২রা ফেব্রুয়ারী ২০১৩ তারিখে ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা ইরনা (IRNA) এবং ইংরেজি টিভি চ্যানেল প্রেসটিভিতে এফ-৩১৩ যুদ্ধবিমান নির্মাণের সংবাদ প্রচার করা হয়। প্রেসিডেন্ট আহমাদিনেজাদ বলেন, " উন্নতি নির্ভর করে আমাদের ইচ্ছার উপর, যদি আমাদের সেই ইচ্ছা না থাকত তবে কেউ আমাদের এখানে পৌঁছে দিতনা। একসময় আমরা গাড়ি আমদানি করে আমাদের দেশে সংযোজন করতাম। আর এখন আমরা সম্পূর্ণ নিজেদের তৈরি বিমান আকাশে ওড়াই।"

ইতিপূর্বে ইরান ২০০৭ সালে আজরাখশ এবং ২০১০ সালে সায়েক নামক দুটি অত্যাধুনিক জঙ্গিবিমান নির্মাণ করেছিল। নবনির্মিত কাহের এফ-৩১৩ জঙ্গিবিমান ইরানের সামরিক ক্ষমতাকে এক ভিন্ন উচ্চতায় পৌঁছে দেবে বলে বিশেষজ্ঞরা ধারনা করছেন।

রেফারেন্স লিঙ্ক
1. wikipedia
2. http://www.thestar.com
3. press tv

( www.techtunes.com.bd ওয়েবসাইটে  5 February, 2013 on 2:36 am তারিখে প্রকাশিত)



Monday, September 10, 2012

বিশ্বের সেরা সুপারকম্পিউটার গুলো


সুপারকম্পিউটার এমন একটা যন্ত্র যাকে তুলনা করা যায় সুপারম্যানের সাথে। সুপারম্যান যেমন সাধারন মানুষের চেয়ে অনেকগুণ বেশি বুদ্ধিমান এবং শক্তিশালি তেমনি সুপারকম্পিউটারও সাধারন কম্পিউটারের চেয়ে হাজারগুণ বেশি ক্ষমতাসম্পন্ন। সাধারনত আবহাওয়া সঙ্ক্রান্ত তথ্য বিশ্লেষণ, ক্ষেপনাস্র ও স্যাটেলাইট নিয়ন্ত্রণ,মহাকাশ গবেষণা,পারমানবিক গবেষণা ও বিভিন্ন ধরনের জটিল বৈজ্ঞানিক কাজে সুপারকম্পিউটার ব্যবহৃত হয়। আসুন এবার দেখে নেয়া যাক পৃথিবীর সেরা সুপারকম্পিউটার গুলোকে।





IBM Sequoia

আইবিএম সেকুইয়া বর্তমান সময়ের সর্বাধিক দ্রুতগতির সুপারকম্পিউটার। এটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কম্পিউটার নির্মাতা প্রতিষ্ঠান আইবিএম(IBM) এর তৈরি। ২০১২ সালের জুন মাসে যুক্তরাষ্ট্রের লরেন্স লিভারমোর ন্যাশনাল ল্যাবরেটরিতে এটি স্থাপন করা হয়। এটি মূলত পারমানবিক অস্র সঙ্ক্রান্ত গবেষণা,মহাকাশ গবেষণা, আবহাওয়া সঙ্ক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য বিশ্লেষণ ইত্যাদি কাজে ব্যবহার করা হবে। লিনাক্স অপারেটিং সিস্টেমে পরিচালিত এই কম্পিউটারটি জাপানের ফুজিৎসু কে কম্পিউটারের তুলনায় ৫৫% বেশি শক্তিশালি। ১৬.৩২ পেটাফ্লপ্স গতিসম্পন্ন  সেকুইয়া ফুজিৎসু কে কম্পিউটারের তুলনায় ৩৭% বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী। এটি চালাতে মাত্র ৭.৯ মেগাওয়াট বিদ্যুতের প্রয়োজন হবে। ১৫,৭২,৮৪২ টি প্রসেসর সংবলিত সেকুইয়া কম্পিউটারটি ১.৬ পেটাবাইট মেমোরি ধারণক্ষমতা সম্পন্ন।



Fujitsu K Computer

কে কম্পিউটার জাপানের ফুজিৎসু কোম্পানির তৈরি একটি সুপারকম্পিউটার। বিশ্বের সেরা কম্পিউটারের তালিকায় বর্তমানে এটি ২য় অবস্থানে আছে। যুক্তরাষ্ট্রের সেকুইয়া কম্পিউটারের পরেই এটি বিশ্বের সর্বাধিক দ্রুতগতির সুপারকম্পিউটার। মূলত কে (K) শব্দটি এসেছে জাপানি শব্দ Kei থেকে যার অর্থ  ১০ কোয়াড্রিলিয়ন বা ১০ পেটাফ্লপজাপানের কোবে শহরের  রিকেন অ্যাডভান্সড ইনস্টিটিউট ফর কম্পিউটেশনাল সায়েন্স ক্যাম্পাসে এই কম্পিউটারটি স্থাপন করা হয়েছে। SPARC64 VIIIfx প্রসেসর সংবলিত সর্বোচ্চ ১০.৫১ পেটাফ্লপ গতিসম্পন্ন এই কম্পিউটারটিও লিনাক্স অপারেটিং সিস্টেমে পরিচালিত হয়। আবহাওয়া ও জলবায়ু সঙ্ক্রান্ত গবেষণা, পারমানবিক গবেষণা, ভুমিকম্প, জ্বালানি শক্তির উন্নয়ন ও বহুবিধ জটিল বৈজ্ঞানিক গবেষণার কাজে এই কম্পিউটারটি ব্যবহার করা হবে।



IBM MIRA


পৃথিবীর সবচেয়ে দ্রুতগতির ৫০০ সুপার কম্পিউটারের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের আইবিএম মিরা ৩য় অবস্থানে আছে। এটিও সেকুইয়া কম্পিউটারের মত Blue Gene/Q গোত্রের প্রসেসর ও ডিজাইনে তৈরি। যুক্তরাষ্ট্রের ডিপার্টমেন্ট অফ এনার্জির অধিনস্ত Argonne National Laboratory তে এটি স্থাপন করা হয়েছে। লিনাক্স অপারেটিং সিস্টেমে পরিচালিত এই কম্পিউটারটির প্রতি সেকেন্ডে ৮.১৬ পেটাফ্লপ গতিতে কাজ করে। এটি ভুমিকম্পের পূর্বাভাস প্রদান, পদার্থবিদ্যা, আবহাওয়া, রাসায়নিক গবেষণা ও বিভিন্ন বহুমুখী জটিল গবেষণার কাজে ব্যবহার করা হবে। এটি ৩.৯ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ শক্তিতে চলে। আইবিএম মিরা কম্পিউটারের নির্মাতা আইবিএম (IBM)  থেকে বলা হয়েছিল, যদি যুক্তরাষ্ট্রর প্রতিটি মানুষ এক বছরে প্রতি সেকেন্ডে যদি একটি করে গননা করে, তবে সেই পরিমান গননা করতে মিরা'র লাগবে মাত্র এক সেকেন্ড।



SuperMUC 
                                       
সুপার এমইউসি আইবিএম এর তৈরি একটি সুপারকম্পিউটার যা জার্মানির মিউনিখের কাছে অবস্থিত লিবনিজ সুপারকম্পিউটিং সেন্টারে স্থাপন করা হবে। এটি  সেকেন্ডে প্রায় ৩ পেটাফ্লপ গতিসম্পন্ন একটি সুপারকম্পিউটার যা লিনাক্স অপারেটিং সিস্টেমে চলে। এটি ১৮,৪৩২ টি ইন্টেল জিওনSandy Bridge-EP প্রসেসর,২৮৮ টেরাবাইট র‍্যাম এবং ১২ পেটাবাইট হার্ডডিস্ক ব্যবহার করা হয়েছে। আইবিএম এর উদ্ভাবিত Aquasar কুলিং সিস্টেম এই কম্পিউটারটিতে স্থাপন করা হয়েছে। এই কম্পিউটারটি লিবনিজ সেন্টারে স্থাপন করা হলে সেটি ইউরোপের গবেষকদের প্রধান গবেষণাকেন্দ্রে পরিনত হবে। জার্মানির bavarian academy of science এই কম্পিউটারটি পরিচালনা করবে। মূলত মেডিসিন, জ্যোতিঃপদার্থবিজ্ঞান, জীববিজ্ঞান, জেনম এনালাইসিস, ভুমিকম্প ইত্যাদি বিষয়সহ আরও অনেক জটিল বৈজ্ঞানিক গবেষণায় এই কম্পিউটারটি ব্যবহার করা হবে। এটি বিশ্বের সেরা ৫০০ কম্পিউটারের তালিকায় বর্তমানে ৪র্থ অবস্থানে আছে।



Tianhe-I & Tianhe-IA series 

Tianhe-1 শব্দটির ইংরেজি প্রতিশব্দ "Milky Way No.1"। গণচীনের ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব ডিফেন্স টেকনোলজি এই কম্পিউটারটি নির্মাণ করে। পূর্বের বিশ্বরেকর্ডধারী এই কম্পিউটারটি স্থাপন করা হয়েছে চীনের  তিয়ানজিন শহরের ন্যাশনাল সুপারকম্পিউটিং সেন্টারে। 2.566 পেটাফ্লপ গতিসম্পন্ন  এই কম্পিউটারটি Intel Xeon E5540 প্রসেসরে পরিচালিও। তিয়ানহে-১এ, তিয়ানহে-১ এর একটি আপগ্রেড ভার্সন। এটি ২০১০ সালের অক্টোবরে প্রথম প্রদর্শন করা হয়। এর সর্বোচ্চ গতি রেকর্ড করা হয় ৪.৭০১ পেটাফ্লপ। এর হার্ডডিস্ক মেমোরি ২ পেটাবাইট এবং র‍্যাম ২৬২ টেরাবাইট। ইন্টেল Xeon প্রসেসর এবং চাইনিজ FeiTeng প্রসেসর সংবলিত এই কম্পিউটারটিও তিয়ানহে-১ এর মত লিনাক্স অপারেটিং সিস্টেমে পরিচালিত। তিয়ানহে-১এ জুলাই,২০১১ পর্যন্ত এক নম্বর অবস্থানে ছিল। পরবর্তীতে জাপানের কে কম্পিউটার এই অবস্থান দখল করে। তিয়ানহে-১এ বর্তমানে সেরা ৫০০ সুপারকম্পিউটারের তালিকায় ৫ম অবস্থানে আছে। 




JAGUAR

সেরা ৫০০ সুপারকম্পিউটারের মধ্যে ৬ষ্ঠ অবস্থানে থাকা কম্পিউটারটির নাম হল জাগুয়ার। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্রে ইনকর্পোরেশনের তৈরি এই কম্পিউটারটি ওক রিজ ন্যাশনাল ল্যাবরেটরিতে স্থাপন করা হয়েছে। 224,256 x86-based AMD প্রসেসরে পরিচালিত এই কম্পিউটারটি  Cray Linux Environment অপারেটিং সিস্টেমে পরিচালিত যা ক্রে ইনকর্পোরেশন উদ্ভাবিত লিনাক্স অপারেটিং সিস্টেমের একটি ভার্সন। এর সর্বোচ্চ গতি ১.৭৫ পেটাফ্লপ। র‍্যামের পরিমান ৮ গিগাবাইট এবং হার্ডডিস্ক ৩৬০ টেরাবাইট। জাগুয়ার কম্পিউটার বর্তমানে বিভিন্ন জটিল ধরনের গবেষণা ও পরিমাপ কাজে ব্যবহৃত হয়। মূলত আবহাওয়ার প্রকৃতি অনুসন্ধান,খনিজ অনুসন্ধান, ভূতত্ত্ববিদ্যা, ভূকম্পনবিদ্যা, রাসায়নিক বিশ্লেষণ ইত্যাদি জটিল ও চ্যালেঞ্জিং গবেষণাক্ষেত্রে এই কম্পিউটার ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। নভেম্বর ২০০৯ থেকে ২০১০ সালের জুন পর্যন্ত এটি ছিল পৃথিবীর সবচেয়ে দ্রুতগতির কম্পিউটার। পরবর্তীতে তিয়ানহে ১এ কম্পিউটার এর শীর্ষস্থানটি দখল করে। 




FERMI

বিশ্বের সেরা ৫০০ সুপারকম্পিউটারের মধ্যে ৭ম অবস্থানকারী কম্পিউটারটির নাম ফেরমি। এটি ইটালির সিনেকাতে অবস্থিত যা ৫৪টি বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সমন্নয়ে গড়ে ওঠা একটি  অলাভজনক প্রতিষ্ঠান। এর সর্বোচ্চ ক্ষমতা ২.১ পেটাফ্লপ/ সেকেন্ড। র‍্যামের পরিমান ১৬ গিগাবাইট। এটি আইবিএম Blue Gene/Q গোত্রের প্রসেসর ডিজাইনে নির্মিত একটি কম্পিউটার যা ২০১২ সালের আগস্ট মাসে সম্পূর্ণভাবে এর কার্যক্রম শুরু করবে বলে আশা করা হচ্ছে। সম্পূর্ণভাবে চালু হলে এটি হবে ইটালি তথা ইউরোপের সর্বোচ্চ গতিসম্পন্ন কম্পিউটারগুলোর একটি। বিভিন্ন জটিল ধরনের মৌলিক গবেষণা, প্রকৌশলবিদ্যা, পদার্থবিদ্যা,গাণিতিক বিশ্লেষণ ইত্যাদি কাজে এই কম্পিউটার ব্যবহার করা হবে।








Saturday, July 21, 2012

যুদ্ধবিমানের ইতিহাসে সেরা বিমানগুলো

প্রতিটি প্রতিটি দেশের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতকল্পে বিমান বাহিনীর গুরুত্ত অপরিসীম। শত্রু দেশের বিমান  আক্রমন মোকাবেলা এবং  প্রতি আক্রমনের মাধ্যমে দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষাকল্পে প্রতিটি দেশের নিজস্ব বিমান বাহিনী থাকা আবশ্যক।আজকের পোস্ট এ যুদ্ধবিমানের ইতিহাসে কয়েকটি আইকন বিমান নিয়ে আলোচনা করব।



MIG-21


মিগ ২১ সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের তৈরি ষাটের দশকের একটি যুগপৎ যুদ্ধবিমান। এটি পৃথিবীর সর্বাধিক উৎপাদিত এবং বিক্রিত বিমান গুলোর একটি। মিকোয়ান গুরেভিচ কোম্পানির নকশাকৃত এই বিমান এখনও পর্যন্ত পৃথিবীর বহু দেশ ব্যবহার করে। এর ন্যাটো কোডনেম ছিল Fishbed। মিগ২১ একটি সুপারসনিক জেট ফাইটার। এটি আকাশ থেকে মাটিতে এবং আকাশ থেকে আকাশে শত্রু বিমানের সাথে যুদ্ধ করতে বিশেষ পারদর্শী। সুপারসনিক গতি এবং উন্নত ম্যানুভ্যারিটি ক্ষমতা সম্পন্ন এই বিমান শত্রুর উপর নিমেষে আঘাত হেনে উড়ে জেতে পারে। ভিয়েতনাম যুদ্ধে উত্তর ভিয়েতনাম এই বিমান ব্যবহার করে আমেরিকানদের বাঘা বাঘা বিমানকে ভুপাতিত করেছিল। কারগিল যুদ্ধে ভারতীয় পাইলটরা মিগ২১ বিমান দিয়ে পাকিস্তানি এফ-১৬ বিমানকে তাড়া করেছিল। একজন দক্ষ পাইলটের পরিচালনায় এই বিমান এক ভয়ঙ্কর বিধ্বংসী মারনাস্র। বাংলাদেশ বিমান বাহিনীও অতীতে এই বিমান ব্যবহার করেছে। বর্তমানে আমাদের বিমান বাহিনী মিগ ২১ এর চাইনিজ ভার্সন এফ-৭ এয়ারগার্ড বিমান ব্যবহার করে।




MIG-29


মিগ২৯ বর্তমান সময়ের অন্যতম ভয়ঙ্কর একটি যুদ্ধবিমান । এটি সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের তৈরি ৪র্থ প্রজন্মের যুদ্ধবিমান যা ১৯৮৩ সালে প্রথম সোভিয়েত বিমানবহরে অন্তর্ভুক্ত হয়।এর ন্যাটো কোডনেম হল ফুল্ক্রাম। মিগ২৯ একটি মাল্টিরোল কমব্যাট ফাইটার যা একইসাথে আকাশে ও ভূমিতে হামলার জন্য অত্যন্ত পারদর্শী। এর শক্তিশালী Klimov RD-33 আফটার বার্নিং টার্বো ফ্যান ইঞ্জিন নিমেষেই বিমানকে সাবসনিক থেকে সুপারসনিক গতিতে নিয়ে যেতে পারে। অত্যাধুনিক কোবরা ম্যানুভ্যারিটি ক্ষমতাসম্পন্ন এই বিমান শত্রুবিমানের মিসাইলকে ফাঁকি দিয়ে পুনরায় পাল্টা আক্রমন চালাতে পারে। সোভিয়েতরা এই বিমানকে তাদের  স্টেট ওফ আর্ট হিসেবে পরিচয় দেয়। এটি দীর্ঘদিন পশ্চিমা এবং ইউরোপিয়ান দেশ গুলোর  ফিয়ার ফ্যাক্টর ছিল। মিগ২৯ বর্তমান সময়ের বহুল আলোচিত একটি বিমান যা পৃথিবীর বিভিন্ন বিমানবাহিনীতে অত্যন্ত সফলতার সাথে পরিচালিত হয়ে আসছে। বাংলাদেশ বিমানবাহিনীতে বর্তমানে ৮টি মিগ২৯ বিমান আছে। 



F-16



এফ ১৬ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি ৪র্থ প্রজন্মের মাল্টিরোল ফাইটার। মার্কিন প্রতিষ্ঠান জেনারেল ডাইনামিকস এই বিমানের নকশা করে। বর্তমানে লকহিড মারটিন কোম্পানি এই বিমান উৎপাদন করছে। মিগ-২৯ বিমানের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে মূলত এই বিমান নির্মাণ করা হয়। অফিসিয়ালি এই বিমানকে ফাইটিং ফ্যালকন বলা হলেও এর ভয়ঙ্কর ধ্বংস ক্ষমতার জন্য পাইলটরা একে ভাইপার বলে থাকে। ১৯৭৮ সালে সার্ভিসে আসার পর থেকে এই বিমান পৃথিবীর বহু দেশে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এর পরিচালন খরচ অন্যান্য বিমান থেকে কম হওয়ায় পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের বিমান বাহিনীর কাছে এর গ্রহণযোগ্যতা অনেক বেশি। বর্তমানে তুরস্কসহ আরও কয়েকটি দেশে এই বিমানের লাইসেন্সড ভার্সন তৈরি করা হয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র,পাকিস্তান,তুরস্ক,ইসরায়েল,গ্রীস,ভেনেজুয়েলা,আরব আমিরাত সহ পৃথিবীর আরও অনেক দেশের বিমানবাহিনী এই বিমান ব্যবহার করে।


F-15 Eagle


এফ ১৫ ঈগল আমেরিকার বিমান নির্মাতা প্রতিষ্ঠান McDonnell Douglas এবং Boeing নির্মিত একটি অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমান। এটি মূলত একটি এয়ার সুপেরিয়রিটি ফাইটার। ভিয়েতনাম যুদ্ধের পর আমেরিকা F-X program হাতে নেয়। যার উদ্দেশ্য ছিল সোভিয়েত মিগ সিরিজের বিমানগুলোকে আকাশযুদ্ধে পরাজিত করার জন্য দক্ষ এবং ক্ষিপ্র বিমান নির্মাণ করা। এরই ফলশ্রুতিতে হেভিওয়েট ফাইটার হিসেবে জন্মলাভ করে এফ১৫ ঈগল এবং লাইটওয়েট ফাইটার হিসেবে এফ-১৬ ফ্যালকন। পাশাপাশি ইউএস নেভির জন্য তৈরি করা হয় এফ-১৪ টমক্যাট। এফ-১৫ দুই ইঞ্জিন বিশিষ্ট সুপার সনিক বিমান যার সর্বোচ্চ গতি প্রতি ঘণ্টায় ২৬৬৫ কিলোমিটার। উপসাগরীয় যুদ্ধে আমেরিকা অত্যন্ত সফলভাবে এই বিমান ব্যবহার করে। বর্তমানে আমেরিকা ছাড়াও ইসরায়েল,জাপান ও সৌদি আরবের বিমানবাহিনীতে এই বিমান ব্যবহৃত হয়।


Eurofighter Typhoon

ইউরোফাইটার টাইফুন একটি অত্যাধুনিক ডেল্টাউইং মাল্টিরোল ফাইটার। এটি মূলত ইংল্যান্ড, জার্মানি, ইটালি ও স্পেনের চারটি বিমান নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের একটি যৌথ প্রকল্প। ১৯৮৩ সালে ফ্রান্স, জার্মানি, ইটালি ও স্পেনের অংশগ্রহনে Future European Fighter Aircraft (FEFA) programme গ্রহন করা হয়। কিন্তু পরে ফ্রান্স এই প্রকল্প থেকে বেরিয়ে আসে এবং পরবর্তীতে তারা Rafale নামে একটি নতুন ফাইটার তৈরি করে। ফ্রান্স এই প্রকল্প থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর বাকি দেশগুলো তাদের এই প্রকল্প অব্যাহত রাখে। ফলশ্রুতিতে ২০০৩ সালে প্রথম সার্ভিসে আসে ইউরোফাইটার টাইফুন। এটি দুই ইঞ্জিন বিশিষ্ট একটি অসম্ভব দ্রুতগতির সুপারসনিক সেমি- স্টিলথ ফাইটার।টাইফুনকে এফ-২২ র‍্যাপটর এর অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে দাবি করে এর নির্মাতা প্রতিষ্ঠান।বর্তমানে ইংল্যান্ড, জার্মানি, ইটালি, স্পেন ছাড়াও সৌদি আরব,অস্ট্রিয়া প্রভৃতি দেশের বিমান বাহিনীতে এই বিমান ব্যবহৃত হচ্ছে। 



Saab JAS 39 Gripen


গ্রিপেন সুইডেনের তৈরি ডেল্টা উইং লাইটওয়েট মাল্টিরোল ফাইটার। ১৯৭৯ সালে সুইডেন সরকার একটি শক্তিশালী ও কার্যকরী বিমান নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহন করে যা একইসাথে আকাশ যুদ্ধ, ভূমিতে বোমাবর্ষণ ও গোয়েন্দাগিরি করার জন্য বিশেষভাবে পারদর্শী।এটি প্রথম সার্ভিসে আসে ১৯৯৭ সালের পহেলা নভেম্বর।সুইডিশ এরোস্পেস কোম্পানি (SAAB) নির্মিত সুপারসনিক এই বিমানটির সর্বোচ্চ গতি ম্যাক ২ (২২০৪ কিঃমিঃ/ ঘণ্টা)/ইউরোপিয়ান এবং ন্যাটো স্ট্যান্ডার্ডে তৈরি এই বিমানের পরিচালন ব্যয় তুলনামুলকভাবে কম।বর্তমানে সুইডেন ছাড়াও দক্ষিন আফ্রিকা, থাইল্যান্ড,  ইংল্যান্ড, হাঙ্গেরি, চেক প্রজাতন্ত্রের বিমান বাহিনীতে এই বিমান ব্যবহৃত হচ্ছে।




Sukhoi Su-27


সুখোই এসইউ-২৭ সোভিয়েত রাশিয়া নির্মিত একটি সুপারসনিক যুদ্ধবিমান। এর ন্যাটো রিপোরটিং নাম হল Flanker । ১৯৬৯ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন আমেরিকার "F-X" program সম্পর্কে জানতে পারে। এর পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে তারা TPFI program গ্রহন করে যার উদ্দেশ্য ছিল আমেরিকার এফ-১৫ এবং এফ-১৬ বিমানগুলোকে আকাশযুদ্ধে প্রতিহত করার জন্য দ্রুতগামী ও শক্তিশালী বিমান নির্মাণ করা। ফলশ্রুতিতে সার্ভিসে আসে মিগ-২৯ এবং এসইউ-২৭ বিমানগুলো। এসইউ-২৭ একটি সুপার ম্যানুভারেবল ডেল্টাউইং বিমান যা অত্যাধুনিক রাডার,সেন্সর এবং ক্ষেপণাস্ত্র সজ্জিত। দুটি শক্তিশালী Saturn/Lyulka AL-31F turbofans ইঞ্জিনবিশিষ্ট এই বিমানের সর্বোচ্চ গতি ম্যাক ২.৩৫ বা ২৫০০ কিমি./ঘণ্টা। ১৯৮৪ সালে সার্ভিসে আসার পর থেকে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের বিমানবাহিনী এই বিমান ব্যবহার করে। বর্তমানে রাশিয়া,গণচীন, এঙ্গোলা, বেলারুশ,ইথিওপিয়া, ভিয়েতনাম, উজবেকিস্তান, কাজাখস্তান, ইউক্রেনসহ পৃথিবীর বহু দেশের বিমানবাহিনী এই বিমান ব্যবহার করছে।





Dassault Rafale


রাফালে ফ্রান্সের Dassault Aviation নির্মিত একটি ডেল্টাউইং মাল্টিরোল ফাইটার। ১৯৭০ সালে ফ্রান্স সরকার তাদের বিমানবাহিনী ও নৌবাহিনীকে ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনা গ্রহন করে। তারা ইংল্যান্ড, জার্মানি, ইটালি ও স্পেনের সাথে ১৯৮৩ সালে ইউরোফাইটার প্রকল্পে যোগ দেয়। কিন্তু এই প্রকল্প আশানুরূপ না হওয়ায় পরবর্তীতে ফ্রান্স প্রকল্প থেকে বেরিয়ে আসে এবং নিজস্ব প্রযুক্তি ও ডিজাইনে একটি কার্যকর মাল্টিরোল ফাইটার নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহন করে। ফলশ্রুতিতে ২০০০ সালের ৪ ডিসেম্বর সার্ভিসে আসে রাফালে বিমানটি। রাফালে বিমানটিতে সর্বাধুনিক প্রযুক্তির রাডার,সেন্সর সিস্টেম, কম্পিউটার সংযোজিত হয়েছে । দুটি Snecma M88 ইঞ্জিনসংবলিত এই বিমানটি অত্যন্ত দ্রুতগামী। এর সর্বোচ্চ গতিবেগ ম্যাক ১.৮ বা ২১৩০ কিমি./ ঘণ্টা। এটি দিবারাত্রি যুদ্ধের উপযোগী একটি অত্যন্ত কার্যকর বিমান। ফ্রান্সের নৌ ও বিমান বাহিনীতে বর্তমানে এই বিমান ব্যবহৃত হয়। এছাড়াও ভারতীয় বিমান বহরে এই বিমান যুক্ত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।



Chengdu J-10



চেংডু জে-১০ গণচীনের তৈরি একটি মাল্টিরোল যুদ্ধবিমান। চীনের Chengdu Aircraft Industry Group (CAC) নির্মিত এই বিমানটি সকল আবহাওয়ায় ব্যবহার উপযোগী একটি সুপারসনিক বিমান। পশ্চিমা বিশ্বে এই বিমানটি Vigorous Dragon নামে পরিচিত। বর্তমানে রাশিয়ান Saturn AL-31 ইঞ্জিনে পরিচালিত এই ফাইটারের পরবর্তীতে ভার্সন গুলোতে চীনের নিজস্ব WS-10A (WoShan-10A) Taihang ইঞ্জিন ব্যবহার করা হবে। চীনা বিমানবাহিনীর অন্যতম একটি স্তম্ভ হিসেবে এই বিমানটি পরিচিত। এর সর্বোচ্চ গতি ম্যাক ২.২ যার ফলে এটি নিমেষেই সুপারসনিক স্পিডে শত্রুবিমানকে ধাওয়া করতে পারে। চীনের নিজস্ব প্রযুক্তির রাডার, সেন্সর, ককপিট ও অন্যান্য যন্ত্রাংশ সংযোজিত এই বিমানটি অত্যন্ত আধুনিক ও যুগোপযোগী। বর্তমানে চীনের বিমানবাহিনীতে ২৬০টির বেশি জে-১০ বিমান আছে। শীঘ্রই পাকিস্তান বিমানবাহিনীতেও (২০১৪-১৫) এই বিমান সংযোজিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।






Dassault Mirage 2000


মিরেজ ২০০০ ফ্রান্সের ডাসাল্ট এভিয়েশন নির্মিত একটি ৪র্থ প্রজন্মের মাল্টিরোল ফাইটার। এটি একটি হালকা ধরনের বিমান যা ৭০ এর দশকের বিমান মিরেজ III এর উন্নত সংস্করন হিসেবে সার্ভিসে আসে । ডাসাল্ট এভিয়েশন প্রস্তাবিত মিরেজ২০০০ প্রজেক্টটিকে ফ্রান্স সরকার ১৮ ডিসেম্বর ১৯৭৫ সালে অনুমোদন করে এবং ১৯৮২ সালে মিরেজ ২০০০ প্রথম সার্ভিসে আসে। মিরেজ২০০০ এর অনেকগুলো  আপগ্রেড ভার্সন নির্মিত হয়েছে যেমনঃ মিরেজ২০০০N এবং মিরেজ২০০০D, মিরেজ২০০০-৫ ইত্যাদি। একটি SNECMA-M53 Turbofan ইঞ্জিন সংবলিত এই বিমানটির সর্বোচ্চ গতি ম্যাক ২.২  অর্থাৎ প্রতি ঘণ্টায় ২৫৩০ কিমি.।এটি অত্যাধুনিক প্রযুক্তির রাডার,এভিয়নিক, ককপিট ও ক্ষেপনাস্র সজ্জিত একটি বিমান যা একইসাথে এয়ার টু এয়ার কমব্যাট এবং ভূমিতে বোমাবর্ষণের জন্য অত্যন্ত পারদর্শী। বর্তমানে ফ্রান্সের বিমান বাহিনী ছাড়াও ভারত, সংযুক্ত আরব আমিরাত, তাইওয়ান, গ্রীস, মিশর, কাতার, পেরু, ব্রাজিল ইত্যাদি দেশের বিমান বাহিনী মিরেজ২০০০ বিমানটি সাফল্যের সাথে  ব্যবহার করে আসছে।





source:  উইকিপিডিয়া
                     ড্যাসাল্ট এভিয়েশন, ফ্রান্স


(এই পোস্টটি 10 February, 2013 on 7:13 pm  তারিখে www.techtunes.com.bd ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হয়েছে)