সুপারকম্পিউটার এমন একটা যন্ত্র যাকে তুলনা করা যায় সুপারম্যানের সাথে। সুপারম্যান যেমন সাধারন মানুষের চেয়ে অনেকগুণ বেশি বুদ্ধিমান এবং শক্তিশালি তেমনি সুপারকম্পিউটারও সাধারন কম্পিউটারের চেয়ে হাজারগুণ বেশি ক্ষমতাসম্পন্ন। সাধারনত আবহাওয়া সঙ্ক্রান্ত তথ্য বিশ্লেষণ, ক্ষেপনাস্র ও স্যাটেলাইট নিয়ন্ত্রণ,মহাকাশ গবেষণা,পারমানবিক গবেষণা ও বিভিন্ন ধরনের জটিল বৈজ্ঞানিক কাজে সুপারকম্পিউটার ব্যবহৃত হয়। আসুন এবার দেখে নেয়া যাক পৃথিবীর সেরা সুপারকম্পিউটার গুলোকে।
IBM Sequoia
আইবিএম সেকুইয়া বর্তমান সময়ের সর্বাধিক দ্রুতগতির সুপারকম্পিউটার। এটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কম্পিউটার নির্মাতা প্রতিষ্ঠান আইবিএম(IBM) এর তৈরি। ২০১২ সালের জুন মাসে যুক্তরাষ্ট্রের লরেন্স লিভারমোর ন্যাশনাল ল্যাবরেটরিতে এটি স্থাপন করা হয়। এটি মূলত পারমানবিক অস্র সঙ্ক্রান্ত গবেষণা,মহাকাশ গবেষণা, আবহাওয়া সঙ্ক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য বিশ্লেষণ ইত্যাদি কাজে ব্যবহার করা হবে। লিনাক্স অপারেটিং সিস্টেমে পরিচালিত এই কম্পিউটারটি জাপানের ফুজিৎসু কে কম্পিউটারের তুলনায় ৫৫% বেশি শক্তিশালি। ১৬.৩২ পেটাফ্লপ্স গতিসম্পন্ন সেকুইয়া ফুজিৎসু কে কম্পিউটারের তুলনায় ৩৭% বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী। এটি চালাতে মাত্র ৭.৯ মেগাওয়াট বিদ্যুতের প্রয়োজন হবে। ১৫,৭২,৮৪২ টি প্রসেসর সংবলিত সেকুইয়া কম্পিউটারটি ১.৬ পেটাবাইট মেমোরি ধারণক্ষমতা সম্পন্ন।
Fujitsu K Computer
JAGUAR
FERMI
বিশ্বের সেরা ৫০০ সুপারকম্পিউটারের মধ্যে ৭ম অবস্থানকারী কম্পিউটারটির নাম ফেরমি। এটি ইটালির সিনেকাতে অবস্থিত যা ৫৪টি বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সমন্নয়ে গড়ে ওঠা একটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠান। এর সর্বোচ্চ ক্ষমতা ২.১ পেটাফ্লপ/ সেকেন্ড। র্যামের পরিমান ১৬ গিগাবাইট। এটি আইবিএম Blue Gene/Q গোত্রের প্রসেসর ডিজাইনে নির্মিত একটি কম্পিউটার যা ২০১২ সালের আগস্ট মাসে সম্পূর্ণভাবে এর কার্যক্রম শুরু করবে বলে আশা করা হচ্ছে। সম্পূর্ণভাবে চালু হলে এটি হবে ইটালি তথা ইউরোপের সর্বোচ্চ গতিসম্পন্ন কম্পিউটারগুলোর একটি। বিভিন্ন জটিল ধরনের মৌলিক গবেষণা, প্রকৌশলবিদ্যা, পদার্থবিদ্যা,গাণিতিক বিশ্লেষণ ইত্যাদি কাজে এই কম্পিউটার ব্যবহার করা হবে।
Fujitsu K Computer
কে কম্পিউটার জাপানের ফুজিৎসু কোম্পানির তৈরি একটি সুপারকম্পিউটার। বিশ্বের সেরা কম্পিউটারের তালিকায় বর্তমানে এটি ২য় অবস্থানে আছে। যুক্তরাষ্ট্রের সেকুইয়া কম্পিউটারের পরেই এটি বিশ্বের সর্বাধিক দ্রুতগতির সুপারকম্পিউটার। মূলত কে (K) শব্দটি এসেছে জাপানি শব্দ Kei থেকে যার অর্থ ১০ কোয়াড্রিলিয়ন বা ১০ পেটাফ্লপ। জাপানের কোবে শহরের রিকেন অ্যাডভান্সড ইনস্টিটিউট ফর কম্পিউটেশনাল সায়েন্স ক্যাম্পাসে এই কম্পিউটারটি স্থাপন করা হয়েছে। SPARC64 VIIIfx প্রসেসর সংবলিত সর্বোচ্চ ১০.৫১ পেটাফ্লপ গতিসম্পন্ন এই কম্পিউটারটিও লিনাক্স অপারেটিং সিস্টেমে পরিচালিত হয়। আবহাওয়া ও জলবায়ু সঙ্ক্রান্ত গবেষণা, পারমানবিক গবেষণা, ভুমিকম্প, জ্বালানি শক্তির উন্নয়ন ও বহুবিধ জটিল বৈজ্ঞানিক গবেষণার কাজে এই কম্পিউটারটি ব্যবহার করা হবে।
SuperMUC
সুপার এমইউসি আইবিএম এর তৈরি একটি সুপারকম্পিউটার যা জার্মানির মিউনিখের কাছে অবস্থিত লিবনিজ সুপারকম্পিউটিং সেন্টারে স্থাপন করা হবে। এটি সেকেন্ডে প্রায় ৩ পেটাফ্লপ গতিসম্পন্ন একটি সুপারকম্পিউটার যা লিনাক্স অপারেটিং সিস্টেমে চলে। এটি ১৮,৪৩২ টি ইন্টেল জিওনSandy Bridge-EP প্রসেসর,২৮৮ টেরাবাইট র্যাম এবং ১২ পেটাবাইট হার্ডডিস্ক ব্যবহার করা হয়েছে। আইবিএম এর উদ্ভাবিত Aquasar কুলিং সিস্টেম এই কম্পিউটারটিতে স্থাপন করা হয়েছে। এই কম্পিউটারটি লিবনিজ সেন্টারে স্থাপন করা হলে সেটি ইউরোপের গবেষকদের প্রধান গবেষণাকেন্দ্রে পরিনত হবে। জার্মানির bavarian academy of science এই কম্পিউটারটি পরিচালনা করবে। মূলত মেডিসিন, জ্যোতিঃপদার্থবিজ্ঞান, জীববিজ্ঞান, জেনম এনালাইসিস, ভুমিকম্প ইত্যাদি বিষয়সহ আরও অনেক জটিল বৈজ্ঞানিক গবেষণায় এই কম্পিউটারটি ব্যবহার করা হবে। এটি বিশ্বের সেরা ৫০০ কম্পিউটারের তালিকায় বর্তমানে ৪র্থ অবস্থানে আছে।
Tianhe-I & Tianhe-IA series
Tianhe-1 শব্দটির ইংরেজি প্রতিশব্দ "Milky Way No.1"। গণচীনের ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব ডিফেন্স টেকনোলজি এই কম্পিউটারটি নির্মাণ করে। পূর্বের বিশ্বরেকর্ডধারী এই কম্পিউটারটি স্থাপন করা হয়েছে চীনের তিয়ানজিন শহরের ন্যাশনাল সুপারকম্পিউটিং সেন্টারে। 2.566 পেটাফ্লপ গতিসম্পন্ন এই কম্পিউটারটি Intel Xeon E5540 প্রসেসরে পরিচালিও। তিয়ানহে-১এ, তিয়ানহে-১ এর একটি আপগ্রেড ভার্সন। এটি ২০১০ সালের অক্টোবরে প্রথম প্রদর্শন করা হয়। এর সর্বোচ্চ গতি রেকর্ড করা হয় ৪.৭০১ পেটাফ্লপ। এর হার্ডডিস্ক মেমোরি ২ পেটাবাইট এবং র্যাম ২৬২ টেরাবাইট। ইন্টেল Xeon প্রসেসর এবং চাইনিজ FeiTeng প্রসেসর সংবলিত এই কম্পিউটারটিও তিয়ানহে-১ এর মত লিনাক্স অপারেটিং সিস্টেমে পরিচালিত। তিয়ানহে-১এ জুলাই,২০১১ পর্যন্ত এক নম্বর অবস্থানে ছিল। পরবর্তীতে জাপানের কে কম্পিউটার এই অবস্থান দখল করে। তিয়ানহে-১এ বর্তমানে সেরা ৫০০ সুপারকম্পিউটারের তালিকায় ৫ম অবস্থানে আছে।
IBM MIRA
পৃথিবীর সবচেয়ে দ্রুতগতির ৫০০ সুপার কম্পিউটারের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের আইবিএম মিরা ৩য় অবস্থানে আছে। এটিও সেকুইয়া কম্পিউটারের মত Blue Gene/Q গোত্রের প্রসেসর ও ডিজাইনে তৈরি। যুক্তরাষ্ট্রের ডিপার্টমেন্ট অফ এনার্জির অধিনস্ত Argonne National Laboratory তে এটি স্থাপন করা হয়েছে। লিনাক্স অপারেটিং সিস্টেমে পরিচালিত এই কম্পিউটারটির প্রতি সেকেন্ডে ৮.১৬ পেটাফ্লপ গতিতে কাজ করে। এটি ভুমিকম্পের পূর্বাভাস প্রদান, পদার্থবিদ্যা, আবহাওয়া, রাসায়নিক গবেষণা ও বিভিন্ন বহুমুখী জটিল গবেষণার কাজে ব্যবহার করা হবে। এটি ৩.৯ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ শক্তিতে চলে। আইবিএম মিরা কম্পিউটারের নির্মাতা আইবিএম (IBM) থেকে বলা হয়েছিল, যদি যুক্তরাষ্ট্রর প্রতিটি মানুষ এক বছরে প্রতি সেকেন্ডে যদি একটি করে গননা করে, তবে সেই পরিমান গননা করতে মিরা'র লাগবে মাত্র এক সেকেন্ড।
SuperMUC
সুপার এমইউসি আইবিএম এর তৈরি একটি সুপারকম্পিউটার যা জার্মানির মিউনিখের কাছে অবস্থিত লিবনিজ সুপারকম্পিউটিং সেন্টারে স্থাপন করা হবে। এটি সেকেন্ডে প্রায় ৩ পেটাফ্লপ গতিসম্পন্ন একটি সুপারকম্পিউটার যা লিনাক্স অপারেটিং সিস্টেমে চলে। এটি ১৮,৪৩২ টি ইন্টেল জিওনSandy Bridge-EP প্রসেসর,২৮৮ টেরাবাইট র্যাম এবং ১২ পেটাবাইট হার্ডডিস্ক ব্যবহার করা হয়েছে। আইবিএম এর উদ্ভাবিত Aquasar কুলিং সিস্টেম এই কম্পিউটারটিতে স্থাপন করা হয়েছে। এই কম্পিউটারটি লিবনিজ সেন্টারে স্থাপন করা হলে সেটি ইউরোপের গবেষকদের প্রধান গবেষণাকেন্দ্রে পরিনত হবে। জার্মানির bavarian academy of science এই কম্পিউটারটি পরিচালনা করবে। মূলত মেডিসিন, জ্যোতিঃপদার্থবিজ্ঞান, জীববিজ্ঞান, জেনম এনালাইসিস, ভুমিকম্প ইত্যাদি বিষয়সহ আরও অনেক জটিল বৈজ্ঞানিক গবেষণায় এই কম্পিউটারটি ব্যবহার করা হবে। এটি বিশ্বের সেরা ৫০০ কম্পিউটারের তালিকায় বর্তমানে ৪র্থ অবস্থানে আছে।
Tianhe-I & Tianhe-IA series
Tianhe-1 শব্দটির ইংরেজি প্রতিশব্দ "Milky Way No.1"। গণচীনের ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব ডিফেন্স টেকনোলজি এই কম্পিউটারটি নির্মাণ করে। পূর্বের বিশ্বরেকর্ডধারী এই কম্পিউটারটি স্থাপন করা হয়েছে চীনের তিয়ানজিন শহরের ন্যাশনাল সুপারকম্পিউটিং সেন্টারে। 2.566 পেটাফ্লপ গতিসম্পন্ন এই কম্পিউটারটি Intel Xeon E5540 প্রসেসরে পরিচালিও। তিয়ানহে-১এ, তিয়ানহে-১ এর একটি আপগ্রেড ভার্সন। এটি ২০১০ সালের অক্টোবরে প্রথম প্রদর্শন করা হয়। এর সর্বোচ্চ গতি রেকর্ড করা হয় ৪.৭০১ পেটাফ্লপ। এর হার্ডডিস্ক মেমোরি ২ পেটাবাইট এবং র্যাম ২৬২ টেরাবাইট। ইন্টেল Xeon প্রসেসর এবং চাইনিজ FeiTeng প্রসেসর সংবলিত এই কম্পিউটারটিও তিয়ানহে-১ এর মত লিনাক্স অপারেটিং সিস্টেমে পরিচালিত। তিয়ানহে-১এ জুলাই,২০১১ পর্যন্ত এক নম্বর অবস্থানে ছিল। পরবর্তীতে জাপানের কে কম্পিউটার এই অবস্থান দখল করে। তিয়ানহে-১এ বর্তমানে সেরা ৫০০ সুপারকম্পিউটারের তালিকায় ৫ম অবস্থানে আছে।
JAGUAR
সেরা ৫০০ সুপারকম্পিউটারের মধ্যে ৬ষ্ঠ অবস্থানে থাকা কম্পিউটারটির নাম হল জাগুয়ার। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্রে ইনকর্পোরেশনের তৈরি এই কম্পিউটারটি ওক রিজ ন্যাশনাল ল্যাবরেটরিতে স্থাপন করা হয়েছে। 224,256 x86-based AMD প্রসেসরে পরিচালিত এই কম্পিউটারটি Cray Linux Environment অপারেটিং সিস্টেমে পরিচালিত যা ক্রে ইনকর্পোরেশন উদ্ভাবিত লিনাক্স অপারেটিং সিস্টেমের একটি ভার্সন। এর সর্বোচ্চ গতি ১.৭৫ পেটাফ্লপ। র্যামের পরিমান ৮ গিগাবাইট এবং হার্ডডিস্ক ৩৬০ টেরাবাইট। জাগুয়ার কম্পিউটার বর্তমানে বিভিন্ন জটিল ধরনের গবেষণা ও পরিমাপ কাজে ব্যবহৃত হয়। মূলত আবহাওয়ার প্রকৃতি অনুসন্ধান,খনিজ অনুসন্ধান, ভূতত্ত্ববিদ্যা, ভূকম্পনবিদ্যা, রাসায়নিক বিশ্লেষণ ইত্যাদি জটিল ও চ্যালেঞ্জিং গবেষণাক্ষেত্রে এই কম্পিউটার ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। নভেম্বর ২০০৯ থেকে ২০১০ সালের জুন পর্যন্ত এটি ছিল পৃথিবীর সবচেয়ে দ্রুতগতির কম্পিউটার। পরবর্তীতে তিয়ানহে ১এ কম্পিউটার এর শীর্ষস্থানটি দখল করে।
FERMI
বিশ্বের সেরা ৫০০ সুপারকম্পিউটারের মধ্যে ৭ম অবস্থানকারী কম্পিউটারটির নাম ফেরমি। এটি ইটালির সিনেকাতে অবস্থিত যা ৫৪টি বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সমন্নয়ে গড়ে ওঠা একটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠান। এর সর্বোচ্চ ক্ষমতা ২.১ পেটাফ্লপ/ সেকেন্ড। র্যামের পরিমান ১৬ গিগাবাইট। এটি আইবিএম Blue Gene/Q গোত্রের প্রসেসর ডিজাইনে নির্মিত একটি কম্পিউটার যা ২০১২ সালের আগস্ট মাসে সম্পূর্ণভাবে এর কার্যক্রম শুরু করবে বলে আশা করা হচ্ছে। সম্পূর্ণভাবে চালু হলে এটি হবে ইটালি তথা ইউরোপের সর্বোচ্চ গতিসম্পন্ন কম্পিউটারগুলোর একটি। বিভিন্ন জটিল ধরনের মৌলিক গবেষণা, প্রকৌশলবিদ্যা, পদার্থবিদ্যা,গাণিতিক বিশ্লেষণ ইত্যাদি কাজে এই কম্পিউটার ব্যবহার করা হবে।
দারুন হয়েছে......।। +++++++
ReplyDeleteঅনেক ধন্যবাদ আপনাকে... :)
Deleteinformative post..+++++++++
ReplyDeletethank you very much.. :)
DeleteThis comment has been removed by the author.
ReplyDeleteভাই বাংলাাদেশে ব্যাবহার হয় ?
ReplyDelete